Our Club
' একসূত্রে বাধিয়াছি সহস্রটি মন
এককার্যে সঁপিয়াছি সহস্র জীবন ' ----
ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মেলবন্ধনে গঠিত প্রতিষ্ঠান 'বেলগাছিয়া যুব সম্মিলনী ' আজ ৭৫তম বর্ষে পদার্পণ করল । ১৯৩৭ সালের ১৫ই আগষ্ট এই সম্মিলনীর প্রতিষ্ঠা । জন্মলগ্নে সঁরস্বতী পূজা উপলক্ষ্যে নাটক, যাত্রা, ম্যাজিক ও গান - বাজনা ছাড়া কোনো কার্যকলাপ না থাকলেও ক্রমশঃ সম্মিলনী একটি মহীরুহে পরিণত হয়েছে এবং নানাদিকে শাখা প্রশাখা বিস্তার করে তেজস্বী নক্ষত্রের ন্যায় দশদিক আলোকেরেই ঝর্ণাধারায় ধুইয়ে দিয়েছে ।
১৯৪৫ সাল থেকে সম্মিলনীর সাধারণ দূর্গোত্সব শুরু ও সেই থেকে নানারকম কার্যকলাপের সূচনা । ১৯৪৭-১৯৪৯ সাল --- বিনামূল্যে পঞ্চাশ জনকে দুগ্ধ বিতরণ করা হত সকাল ৭-৩০ টা থেকে ৯-৩০ টা পর্যন্ত। ১৯৬৯ - ১৯৮১ সাল --- বালক ভোজন ও দরিদ্র নারায়ণ সেবা এবং ১৯৭৪ - ১৯৭৫ সাল দুঃস্থদের বস্ত্র বিতরণ করা হত । এছাড়া, বিভিন্ন সময় ভূমিকম্প ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সাহায্যদান, আর - জি - কর হাসপাতালে রোগীদের ফল-মিষ্টি বিতরণ, রক্তদান শিবিরের আয়োজন - এইসব কিছুর মাধ্যমে সম্মিলনী সেই প্রতিষ্ঠাদিবস থেকে আজ অবধি নানারকম সমাজকল্যাণমূলক কার্যে ব্রতী হয়েছে ।
এছাড়াও রয়েছে, সভ্যবৃন্দের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় সম্মিলনীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন ইতিহাস । পল্লীবাসীদের দৈনন্দিন একঘেয়েমির জীবন থেকে কিছুটা আনন্দ দেবার জন্য ১৯৭০ সাল থেকে শারদোত্সবে যাত্রা, নাটক ও জলসা, রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন এবং ১৯৮২ সাল থেকে সারা বাংলা একাঙ্ক নাটক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে । ১৯৮৩ ও ১৯৮৪ সালে সারা বাংলা সাহিত্য প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়, যা সকলের অকুন্ট প্রশংসা পায়। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে সম্মিলনী ছোটদের বসে আঁকো প্রতিযোগিতা, আবৃত্তি প্রতিযোগিতা, নৃত্য প্রতিযোগিতা এবং পরিণতদের জন্য ফুটবল, তাস, দাবা ও ক্যারাম প্রতিযোগিতার আয়োজন করে এক আলাদা মাত্রা প্রদান করেছে । এর ই মধ্যে উল্লেখযোগ্য খেলাধুলা বহিঃবিভাগে ফুটবলে ১৯৮২ ও ১৯৮৩ সালে দেশবন্ধু পার্কে ক্যালকাটা ডিস্ট্রিক্ট স্পোটর্স এস্যোসিয়েশন পরিচালিত ক্যাপস্টান ও উইলস্ ট্রফি সম্মিলনী জয়ী হয়। সম্প্রতি সম্মিলনীর পূজাপ্রঙ্গণে শুরু হওয়া ' ক্যারাটে ক্লাস ' সম্মিলনীকে আরও এক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে সংস্কৃতিচর্চার দিকে ।
স্বাধীনতা দিবস ও সম্মিলনীর প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করা হয় নানাপ্রকার অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে । দূর্গা পূজা --- সম্মিলনীর এই উত্সবটি পালিত হয় খুব নিষ্ঠা সহযোগে । প্রথাগত প্রতিমাপূজার রীতিতে বিশ্বাসী হলেও যুগোপযোগী হয়ে উঠতে সম্মিলনী নিজেদের নাম নথিভুক্ত করেছে ' থিমভাবনার তালিকায় ' এবং সকলের অক্লান্ত প্রচেষ্ঠায় নতুন ভাবধারার প্রচলন খুব সাফল্যের সঙ্গে করাই সম্ভব হয়েছে । এছাড়াও, প্রতি বছর জানুয়ারি মাসে সম্মিলনীর সভ্যবৃন্দ ও পল্লীবাসীদের নিয়ে বনভোজনের ব্যবস্তা করা হয় ।
এইভাবে দীর্ঘ ৭৫ বছর ধরে সম্মিলনী তাদের অক্লান্ত প্রচেষ্ঠা, একনিষ্ঠতা ও সততার জন্য ক্ষুদ্র গন্ডি পরিত্যাগ করে নিজেদের বৃহত্তর স্বার্থে উজার করে দিতে সক্ষম হয়েছে । পুরুষ ও নারী এই দুই সভ্য বিভাগের সহযোগিতায় সম্মিলনী আগামী দিনেও শ্রীবৃদ্ধি ঘটাবে নিজের পরিবারের । তাই সকলের উদ্দেশ্যে সম্মিলনীর পক্ষ থেকে রইল আমাদের ছোট্ট আমন্ত্রণ বাণী ------
' সবারে করি আহ্বান ।
এসো উত্সুক চিত্ত,
এসো আনন্দিত প্রাণ ।'
Our work is dedicated to the prosperity of our society!